Thursday, 7 June 2018

স্বপ্নের অপ্সরী(পর্ব-৩)

স্বপ্নের অপ্সরী অাদনানের স্বপ্নেই রয়ে গেলো,
তাহাকে সে দেখেও দেখলো না।দেখলোনা বললে ভুল হবে, তাকে দেখতে দিলোনা।
অাজ ক্লাসের অফ টাইমে অাদনান ভার্সিটির লেকের পাড়ে গিয়ে এ দুদিনে ঘটে যাওয়া পুরো বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করলো,
ভার্সিটির প্রথম দিনের ক্লাসে ওর জোকস শুনেও এক মাত্র যে মেয়েটি হাসলো না,সেদিনকার মোটা মেয়েটার সাথে ধাক্কা লাগায় যে মেয়েটি ওকে ঝাড়ি দিয়েছিলো,অাসলে উক্ত দুটো ঘটনা একটি মেয়ের সাথেই ঘটে প্রথম দিন অাদনানের দৃষ্টি ঐ মেয়েটির দিকে গেলেও তার চেহারার দিকে ক্ষণিকের জন্যে কিন্তু তৃতীয় কোন একটা বিষয় যা মেয়েটাকে দেখার অাকর্ষণ কেড়ে নেয় এবং যা অাদনান সেদিনকে বারং বার মনে করতে চেয়েও ব্যার্থ হয়,যার ফলে দ্বিতীয় দিনে মেয়েটিকে চিনতে পারে নি।
অাদনান প্রথম দিনের স্বপ্ন,ঐ দিনের ক্লাসে বিশেষ কিছুর প্রতি দৃষ্টি অাকর্ষণ এবং যেটি ও ভুলে যায় এবং মনে করতে চেয়েও পারে না সেটি,দ্বিতীয় দিনে ধাক্কা তৃতীয় কোন এক সুন্দরী মেয়ে এসে ওকে ঝাঁড়ি এসকল ঘটনা ও ডাইরিতে লিখে রাখে ও প্রতি রাতে ঘুমানোর অাগে তা নিয়ে ভাবে এবং অাজকের ক্লাসে দেখা অসামাপ্ত স্বপ্ন নিয়ে ভাবে,তারপর গত দুদিনের ঘটণাগুলোর সাথে সংযুক্ত করে সমীকরণ অাকারে মিলাতে শুরু করে।সমীকরণ মেলাতে মেলাতে একসময় আদনান ক্লান্ত হয়ে যায়, যার ফলে আদনানের চোখ লেগে আসে।চোখের সামনে আবারো সেই চেনা অপ্সরী। আর,এইবার পালাতে পারেনি।ঠিকি ধরা পড়েছে।আরে! এতো সেই মেয়ে...পরক্ষনেই আদনান চোখ মেলে তাকালো।এবং ভার্সিটিতে দৌড়ে গেলো।কারণ,তার সব সমীকরণ মিলে গিয়েছে।এখন তার সাথে কথা বলাই বাকি।
অাদনান ক্যাম্পাসে গিয়ে তাকে খুঁজতে শুরু করলো,অতঃপর তাকে পেলো,সে মোটু মেয়েটা সহ অারও বেশ কয়েকজন বান্ধবীর সাথে ক্যান্টিনে বসে গল্প করছে।
অাদনান মোটা মেয়েটিকে ডাকলো বললো-
-তুমি তোমার ঐ ফ্রেন্ডকে একটু লেকের পাড়ে আসতে বলো।
:কেনো?
-একটু কথা ছিল।প্লিজ ওকে যেভাবেই হোক লেকের পাড়ে পাঠাও।
:ওকে,পাঠাচ্ছি।
-ধন্যবাদ আপুনি।
:ঠিক আছে।
লেকের পাড়ে গিয়ে অাদনান অপেক্ষায় রইলো,অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘঠিয়ে সে এলো,
:অাপনি এখানে অামায় ডাকার কারণ-
-তেমন কিছু নয়,কয়েকটি প্রশ্ন করবো শুধু তাঁর উত্তরগুলো দিলেই হবে...
:সম্ভবপর ও দেওয়ার মতো হলে দিবো...
-তোমার নাম?
:নীলা,
-কলেজে প্রথম দিনে তুমি কি কালার এর ড্রেস পড়ে এসেছিলে?
:নীল একটা (সেলোয়ার কামিজ)
-তোমার ঘাড়ে কি কোনো তিলা আছে?..
: হুম,কিন্তু.....(নীলা কিছু একটা বলতে যাবে, তার আগেই আদনান বলে)
- আর,মুখের পাশে মেকাপ করে কৃত্রিম তিলাটি দেওয়ার কারণ কি?
-এবার নীলা বিস্মিত হয়ে গেলো,সে বললো অাপনি কি করে জানলেন অামার ঘাড়ে একটি তিলা অাছে অার এটি তো চুলের অাড়ালে থাকে এটি তো অাপনার জানার কথা নয়,সবথেকে বড় কথা হলো অামার গালের তিলাটি তো তেমন কেউই ধরতে পারে না অাপনি কি করে ধরলেন,,
এবার অাদনান কিছুখন স্তব্ধ হয়ে গেলো এরপর ও নীলাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
"প্রেম আমার প্রথম দিনের আলো
শেষ বিকেলের পথ
প্রেম আমার স্বপ্নে দেখা রাজকুমারী
তেপান্তরের মাঠ
প্রেম যেন স্বপ্নে পাওয়া তুমি
প্রেম যেন স্বপ্নে দেখা তুমি........
এই নীলা তুমি কি জানো?
তুমি হলে আমার স্বপ্নে দেখা অপ্সরী,"
এরপর অাদনান হাঁটু গেড়ে নীলাকে প্রথমে একটা কৃত্রিম নীল ফুল এরপর প্রাকৃতিক টকটকে লাল ফুল দিলো বললো,তোমায় স্বপ্নেই ভালবেসেছি আর, বাস্তবে তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি।আমায় ফিরিয়ে দিওনা।
নীলা হতবাক হয়ে গেলো,বিস্মিত হয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অাদনান এর দিকে,কোন কিছুই ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারছিলোনা....কারন,এইদুটো ফুল যে নীলার খুব পছন্দের।আর,আদনান সেইটা কিভাবে জানলো।অনেক প্রশ্ন নীলার মাথায় ঘুরছিলো।
অাদনান নীলাকে একটা চিঠি দিলো সেখানে অাদনানের দেখা গত দুদিনের স্বপ্ন লেখা ছিলো।আর
সেই চিঠি পড়েই নীলা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায়।
নীলা কিছুটা অবাক হয় যে এটা কিভাবে সম্ভব! পরক্ষনেই ভাবে, নীলা তো এমন কাওকেই চেয়েছিল যে কিনা তাকে না দেখেই ভালবাসবে, খুব ভালবাসবে।
নীলা আদনানের হাত থেকে ফুল গুলো নিয়ে বললো,
-তোমার স্বপ্নে দেখা অপ্সরীকে সারাজীবন ভালবাসবে তো?
: হুম,বাসবো।
-সারাজীবন পাশে থাকবেতো?
: হুম,মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবো।তোমায় যে খুব ভালবেসে ফেলেছি।
-তাহলে চলো দুজন মিলে ভালবাসাময় রাজ্য গড়ি।
এর পর আদনান আর নীলা পায়ে পা মিলিয়ে চলে তাদের ভালবাসাময় রাজ্য গড়তে সেই চেনা পথটায়।
(সমাপ্ত)

No comments:

Post a Comment