বর্তমানে ক্লাসে,চায়ের দোকানে,পথে-ঘাটে,খেলার মাঠে এবং সোশ্যাল মিডিয়া সহ সর্বদাই অধিকাংশ মানুষের মধ্যে রীতিমতো একটা যুদ্ধ বা তর্ক লেগে গেছে। যুদ্ধের টপিক ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা। দু’পক্ষের সমর্থকদের একে-অন্যকে নিয়ে ঠাট্টা,মশকারিতে ব্যাপারটা খুবই বিদঘুটে হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর্জেন্টিনা সমর্থকরা তাদের দু’বার বিশ্বকাপ জয় এবং নিকট অতীতে ফাইনালিস্ট হওয়ার গল্প ফাঁদতে ব্যস্ত। অন্যদিকে ব্রাজিল সমর্থকরা নিজেদের পাঁচবারের বিশ্বকাপ ট্রপি জয়ের গল্প বলে বিগত বছরগুলোর ব্যর্থতা লুকাতে মরিয়া।
নিজ পছন্দের দলের পক্ষে গোয়ের জোরে, কিংবা হাসি তামাশা সীমাহীন যুক্তি চলতেই থাকে। কেউ বলে ব্রাজিল ৫ বার বিশ্বকাপ নিয়েছে, তাই ব্রাজিলেই সেরা। আবার আর্জেন্টাইন সমর্থকদের যুক্তি, খেলা কেবল কাপ নেয়া ওপর নির্ভর করে না। একটি ভালো দল মানে, সেই দলের প্লেয়াররা কতটুকু গোছানো খেলা খেলে, ফাউলের সংখ্যা বা ফেয়ার প্লে’র সংখ্যা কেমন, সব কিছুর ওপরে। সেই বিচারে তারা দাবি করে থাকেন ফুটবলে আর্জেন্টিনাই পৃথিবীর সেরা।
কিছু আছে জার্মানী সমর্থক। এরা আকারে-ইঙ্গিতে আবার আর্জেন্টিনার দিকেও ঢলে পড়ে মাঝে মাঝে। অন্যদিকে হাতেগোনা কিছু পর্তুগাল সমর্থকরা যেন চোখমুখ বন্ধ করে ব্রাজিলকেই তাদের ‘সেকেন্ড হোম’ মনে করে। এই বিতর্ক মাঠ, ক্লাস আর চায়ের আড্ডা ছাপিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও এসে ভর করেছে। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে নিয়ে হাসি, ট্রল আর কৌতুক করে যেন একরকম পৈচাশিক আনন্দ পাচ্ছে।
ফেসবুকে সেলিব্রেটি থেকে অামজনতা চলছে ট্রল পাল্টা ট্রল।
যেমন ফেসবুকে রফিকুল রনি লিখেছেন, “অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বলতে কিছু নেই। সবই আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল।”
অন্যদিকে কাজী মাহতাব তানসেন গত বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের ৭ গোল খাওয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে লিখেছেন, “ব্রজিলের সেভেন আপ মনে আছে বন্ধুরা?” এর সাথে তিনি একটি সেভেন আপের ছবির মধ্যে ব্রাজিলের পতাকা এডিট করে একটি ছবি পোস্ট করেছেন।
এসব ট্রল পাল্টা ট্রলে যোগ দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন, “আর্জেন্টাইনরা ব্রাজিলের সাপোর্টার হয়া গেসে। চিলির বিপক্ষে তারা ফুটবল গ্রেটদের জয় চায়।”
অন্যদিকে সাঈদ আহমেদ লিখেছেন, “সবাই দোয়া করবেন যেন ২০১৮ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকে।” সাথে তিনি একটি হাসপাতালের আইসিইউ রুমের ছবি পোস্ট করেছেন। যাতে বিছানার চাদর টা আর্জেন্টিনার পতাকা। আর বালিশটাতে ফুটবলের ছবি। আশেপাশে আইসিইউ-এর মেশিনারিতে ভরপুর।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল আর্জিন্টিনাকে ঘিরে বাংলাদেশের ভক্তদের আগ্রহ, তর্ক-বিতর্ক-আনন্দ করা নতুন নয়।কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের দেশের কিছু কিছু অার্জেন্টিনা ব্রাজিল ভক্তের উত্তেজনা মাত্রাটা এতটাই তিব্র হয় যে তর্ক বা বাকযুদ্ধে অনেক সময় আপন ভাইয়ে-ভাইয়ে, বোন-ভাই, আত্মীয়-স্বজন-বন্ধুবান্ধবের মধ্যে মনমালিন্য হচ্ছে।এমনকি নিজের জীবন ও বউ তালাকের মতো ঘটনাও এমনকি উঁচু যায়গায় পতাকা টানাতে গিয়ে অথবা প্রিয় দলের ম্যাচ হারার শোকে প্রাণহানির ঘটনাও শোনা যায়।যা কখনো কাম্য হতে পারে না। খেলাকে নিতে হবে খেলা হিসেবেই। কিন্তু বাংলাদেশের দর্শক ও সমর্থকদের সে উত্তেজনা যেন শেষ না হয়ে আরো বেড়ে গেছে। এ উত্তেজনা কি চরমে ওঠেছে তা টের পাওয়া যায় ফেইসবুকে ঢুকলেই।
পরিঃশেষে বলবো ফুটবল বিশ্বকাপ এ অার্জেন্টিনা ব্রাজিল বা অন্য দল এর মধ্যে বাকযুদ্ধ এগুলো লিমিটে রাখা উচিৎ,এটির মাত্রা যাতে এমন না হয় যাতে করে অপরের সাথে মন মলিন্য হতে পারে,ফুটবল বিশ্বকাপকে নিছকই বিনোদন হিসেবে নেওয়া উচিৎ খেয়াল রাখতে হবে এটি জাতে অামাদের জীবনের সাথে গুলিয়ে না যায়।
যাই হোক অাজ তৃতীয় পক্ষ বা নিরপেক্ষ হয়ে কিছু নীতিমূলক কথা বললাম,পরবর্তি পর্বে অার্জেন্টিনার সমার্থক হয়ে রোস্টিং হবে ব্রাজিল সমার্থকদের যুক্তি ও তথ্য দিয়েই সাজাবো চোখ রাখেন অামার প্রোফাইলে.....
No comments:
Post a Comment