Thursday, 31 May 2018

সপ্নের অপ্সরী(পর্ব-১)

....নিস্তব্ধ নিঝুম কোলাহলমুক্ত দিগন্ত বিস্তৃত উন্মুক্ত উপত্তকায় বইছিলো বসন্তের হাওয়া,প্রকৃতির অপরূপ মনোরম নির্মল পরিবেশ একা একা উপভোগ করছিলো অাদনান,বেশ ভালই লাগছিলো ওর কিন্তু একজন সঙ্গীর বড়ই অভাব ও প্রয়োজনীয়তা বোধ করছিলো,খানিকখন পরই হঠাৎ দৃষ্টিগোচর হলো এক অচেনা মুগ্ধকর সৌন্দর্যময় মানবীর,পাতলা গড়ন,ফর্সা শরীর..সে পরিধাণ করেছিলো নীল শাড়ি,হাতে কাচের চুড়ি,লম্বা কেশগুলো ঝর্ণাধারা মত সেগুলো পৃথিবীর সুন্দরতম পতাকার মত বাতাসে উড়ছিলো,লালনা যেন অাদনান এর জন্যেই অপেক্ষায় রয়েছে,অাদনান গুটিগুটি পায়ে পিছন থেকে অঙ্গনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে,অার সম্মুখ ও কাছ থেকে মেয়েটির চেহারা দেখতে ও কথা বলতে ছেলেটি ব্যাকুল হয়ে উঠছে,মনের মধ্যে এক অজানা শিহরণ জাগানো রোমাঞ্চকর অনুভূতি কাজ করছিলো এবং অদ্ভুত এক ভালো লাগা শুরু করছিলো অাদনানের,যদিও অাদনান মেয়েটিকে পিছন থেকে তাহার সৌন্দর্যময় রূপ দেখেই মুগ্ধ হয়েছে,অবশেষে সম্মুখভাগ থেকে মেয়েটিকে দেখবার ও কথা বলবার রোমঞ্চকর অনুভূতির অবসান ঘটতে যাচ্ছে ঠিক এমন সময় নিস্তব্ধ নির্জন এলাকায় যেখানে অাদনান ও মেয়টি ছাড়া চারপাশে অন্য কেউ নেই সেখানে কোথা থেকে কে যেন চেঁচামেচি করছে,অাদনান মেয়েটিকে ওর দিকে ঢাক দিল এবং রূপসী প্রণয়িনী পিছনে ফিরে তাকাবে অাদনানও দেখবে দেখবে ঠিক এমন সময় এক ধাক্কা,সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি ভেনিস হয়ে গেল,চারপাশের পরিবেশ অাস্তে অাস্তে ঝাপসা হতে লাগলো এবং চোখ দুটো খুলে গেল,অাদনান তাকিয়ে দেখে মা এসে বলছে,এই অাদনান এখনও ঘুমাচ্ছিস,অাদনান উঠে বুঝতে পারলো ওটা তার স্বপ্ন ছিল।সে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে একটু হাসল,কয়েক মিনিট চোখ বুঝে স্বপ্নের মেয়েটিকে পুনরায় রিভিউ করার বিশেষ করে চেহারাটি দেখবার ব্যার্থ চেষ্টা করলো কিন্তু সে অার এলো না।তারপর সে তার মা কে বলল-
-উঠছি আম্মু।(অাদনান)
-তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে আয়।।টেবিলে নাস্তা রাখা আছে।(মা)
-ওকে আম্মু।(অাদনান)
এই বলে অাদনান ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে চলে গেল।বিষন্ন মনে উঠে গেলো হাত মুখ ধুয়ে ওয়াশরুম এ গিয়ে স্বপ্নের রাজকুমারীকে নিয়ে কিছুখন ভাবলো,নীল শাড়ি,কাঁচের চুড়ি,পাঁতলা গড়ন,ফর্সা ত্বক এবং লম্বা চুল অার সেই রোমান্টিক পরিবেশ,এ শব্দগুলো ভাবনার জগৎ এ কিছুখন খেলা করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
-সে তার মায়ের পাসের চেয়ারে বসে নাস্তা করলো।
-বাবা,আজ ভার্সিটিতে যাবি না সময় হয়ে গেছে তো...
-যাবো আম্মু।
-কখন??
-এখনই নাস্তা করেই বের হবো।
নাস্তা করেই সে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গেল।অনেক দেরি হয়ে গেছে তাই সে সিএনজি ভাড়া করে গেল,তারপরও ১৫ নিনিট দেরী হয়েছে ক্লাসে এসে দেখে,
লম্বা চওড়া ধবধবে ফর্সা কম বয়সী সুন্দরী এক ম্যাম ক্লাস নিচ্ছে,ম্যম টাইম সেন্স নিয়ে কথা বলছিলো,এদিকে অাদনান ক্লাস শুরুর ১৫ মিনিট পর পৌঁছালো.. ম্যাম অাদনানের দেরী করে অাসার কারণটি জানতে চাইলো,
-ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছে,তাই দেরী হয়েছে।(অাদনান)
-তুমি যেহেতু টাইম মেইন্টেন করতে পারো নি সেহেতু তুমি ক্লাস থেকে বের হয়ে যাও..(ম্যাম)
-অাদনান বের হয়ে যেতে যেতে,ম্যামের কাছে এসে বলে ম্যাম টাইম সেন্স নিয়ে একটু কথা বলি।
-হ্যাঁ সিওর।(ম্যাম)
-একবার অামি ইদের ছুটিতে দেশের বাড়ি চট্টগ্রাম যাবো,গাড়ি ছিলো ৮:৩০ এ অামি সেখানে অাধ ঘন্টা লেইট করে যাই,তাই অার লঞ্চ গিয়ে পাইনি মিস করি।(অাদনান)
-ঠিক এই কথাটাই বলছিলাম,তুমি যেহেতু টাইম মেইনটেইন করো নি সে কারণেই তুমি গাড়ি গিয়ে পাওনি,লুজার।(ম্যাম)
-তারপর শুনেন না কি হয়েছে,অামি মন খারাপ করে বাসায় গিয়েছি টিভি ছেড়ে রাত ১০:০০ খবরে দেখি চট্টগ্রাম সড়কে একটি গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট করে,হায় অাল্লাহ অামারও তো চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিলো,যাই হোক একটু পর দেখি অামি যে গাড়িতে যেতে চেয়েছিলাম ওটিই অ্যাকসিডেন্ট করে অার অাহত ৩৫,নিহত ৫।এখন বলুন ম্যাম সেদিন যদি অামি সঠিক সময়ে গাড়ি ধরতাম তাহলে কত বড় একটা দুর্ঘটনার শিকার হতাম।সেদিন অামি টাইম মেন্টেইন না করার কারণেই সেই ৪০ জনের মতো অামি নিহত ও অাহত হই নাই....
-কিছুটা নাকানি চুবানি খেয়ে বিরক্তের সুরে বললো বসো গিয়ে,(ম্যাম)
অার এদিকে অাদনানের কথা শুনে এবং ম্যামের বোকা হয়ে যাওয়ার অবস্হা দেখে  সবাই খিলখিলিয়ে হাসি শুরু করে দিলো,কিন্তু অাদনানের ক্ষণিকের জন্যে চোখ যায় একজনের উপর যে কিনা সবার মত না হেসে নিশ্চুপে বসে রইলো,যেন তাঁর কাছে মনে হলো এটি হাসির এমন কি হলো এবং অামি কথাটি যে বানিয়ে বলেছি সেটিও যেন সে ধরে ফেলেছে!
চলবে----

No comments:

Post a Comment